রাতভর ইউক্রেনে ‘ব্যাপক’ রুশ হামলায় নিহত ৮, আহত ৩০

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাতভর ‘ব্যাপক’ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এই হামলায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৩০ জন। নিহতদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটল যখন রাশিয়া ও ইউক্রেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি চুক্তির উদ্যোগ নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলছে।
এএফপির সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, কিয়েভে রাতের আকাশে বড় বড় বিস্ফোরণ দেখতে পান তারা। এ সময় চারদিকে বিস্ফোরণের আলো ছড়িয়ে পড়ে ও ধোঁয়া দেখা যায়।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইগর ক্লিমেঙ্কো জানিয়েছেন, হামলায় চারজন মারা গেছেন এবং প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন।
পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) জেলেনস্কি লেখেন, আমাদের শহর ও জনপদগুলোর ওপর আরও একটি ব্যাপক হামলা চালানো হয়েছে। এতে আরও হতাহতের ঘটান ঘটেছে। তিনি জানান, শিশুসহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত আটজনে দাঁড়িয়েছে।
কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তাকাচেঙ্কো বলেন, নিহতদের মধ্যে একজন ১৪ বছর বয়সী মেয়ে ছিল। আহতদের মধ্যে সাত থেকে ১৭ বছর বয়সী পাঁচজন শিশুও রয়েছে।
মেয়র ভিতালি ক্লিটসকো এই হামলাকে ‘ব্যাপক আক্রমণ’ বলে উল্লেখ করেন। এতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাকাচেঙ্কো আরও জানান, রাশিয়া ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে। তারা ইরানের তৈরি শাহেদ ড্রোনও ব্যবহার করেছে। আবাসিক বাড়িঘরগুলোকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন দিক থেকে এই হামলা চালানো হয়েছে। এতে দারনিৎস্কি জেলায় একটি পাঁচতলা ভবন ভেঙে পড়েছে এবং শহরের মাঝখানে একটি শপিং মল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের পাল্টা হামলা
অন্যদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা রাতে ১০০টিরও বেশি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে। ইউক্রেনের এক হামলায় ক্রাসনোদার অঞ্চলের একটি তেল শোধনাগারে আগুন লেগেছিল, তবে কেউ আহত হননি।
কয়েক মাস ধরে শান্তি আলোচনার মধ্যেই রাশিয়ান বাহিনী ধীরে ধীরে ইউক্রেনে অগ্রসর হচ্ছে। এই মাসে আলাস্কায় ট্রাম্প রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গেও দেখা করেছেন। তবে এরপর থেকে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ইউক্রেন যেকোনো শান্তি চুক্তির আগে ভবিষ্যতে রাশিয়ার আক্রমণ থেকে সুরক্ষার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে নিশ্চয়তা চায়। রাশিয়া ইউক্রেনের এই দাবিকে বাস্তবসম্মত নয় বলে মনে করছে। তারা ইউক্রেনে পশ্চিমা শান্তিরক্ষী সেনা মোতায়েনের তীব্র বিরোধিতা করেছে।