সাড়ে ৫ কোটি মার্কিন বৈধ ভিসাধারীর রেকর্ড খতিয়ে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ ভিসাধারী সাড়ে ৫ কোটি অভিবাসী ব্যক্তির তথ্য নতুন করে যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। তাঁদের মধ্যে কেউ যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার হওয়ার মতো অভিবাসনের কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেছে কি না বা ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আল জাজিরা এমন খবর প্রকাশ করেছে।
এদিন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক ঘোষণায় বলেছেন, ‘আপাতত বিদেশি ট্রাকচালকদের জন্য কোনো কর্মভিসা দেওয়া হবে না। বিদেশি চালকেরা মার্কিন নাগরিকদের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছেন এবং স্থানীয় চালকদের কাজ নষ্ট করছেন।’
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেকোনো সম্ভাব্য অসঙ্গতি খুঁজতে সকল মার্কিন ভিসা হোল্ডারকে ‘নিরন্তর যাচাই’ করা হচ্ছে। এমন কোনো তথ্য পাওয়া গেলে ভিসা বাতিল করা হবে। ভিসা হোল্ডার যদি যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন তবে তাকে নির্বাসনের মুখোমুখি হতে হবে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পর অবস্থান, অপরাধমূলক কার্যকলাপ, জননিরাপত্তার প্রতি হুমকি, কোনো ধরনের ‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপে’ জড়িত থাকা, বা ‘সন্ত্রাসী সংগঠনকে’ সহায়তা করার মতো বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈধ ও অবৈধ উভয় অভিবাসীর ওপর বড় ধরনের অভিযান শুরু করেছেন। সরকার প্রথমে বলেছিল, তারা কেবল বিপজ্জনক অপরাধীদের ওপর নজর দেবে। কিন্তু এখন প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নিউইয়র্ক টাইমসের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছর সরকার চার লাখ মানুষকে নির্বাসিত করার পথে রয়েছে।
রেস্তোরাঁ, নির্মাণ সাইট ও খামারে অভূতপূর্ব অভিযান চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ইমিগ্রেশন এজেন্টরা আদালত থেকেও অভিবাসীদের গ্রেপ্তার করছে, যেখানে তারা তাদের বৈধতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সিভিল অ্যাপয়েন্টমেন্টে অংশ নিচ্ছিলেন। সরকার মানবিক প্যারোল এবং টেম্পোরারি প্রটেক্টেড স্ট্যাটাস (টিপিএস) বাতিল করারও চেষ্টা করছে, যা প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়া কয়েক লাখ মানুষকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার এবং কাজ করার অধিকার দিয়েছে।

একইভাবে শিক্ষার্থীদের ভিসাও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সপ্তাহের শুরুতে জানিয়েছে, এই বছর ৬ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের দাবি, এসব শিক্ষার্থী হয় আইন লঙ্ঘন করেছে অথবা সন্ত্রাসবাদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তবে বাস্তবে দেখা গেছে, যেসব শিক্ষার্থী প্র-ফিলিস্তিনি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল বা মতামত লিখেছিল- তাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। যদিও কিছু ক্ষেত্রে এমনও শিক্ষার্থী আছেন যারা কোনো ধরনের সক্রিয়তায় জড়িত ছিলেন না, তাদের ভিসাও বাতিল করা হয়েছে।