ইসরায়েলে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ, গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবি

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা ও ফিলিস্তিনিদের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার দাবিতে ইসরায়েলের তেল আবিবে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ বিশাল এক সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। এটি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে অনুষ্ঠিত সবচেয়ে বড় সমাবেশে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই সময়ে দেশব্যাপী ধর্মঘট ও বিক্ষোভ পালন করা হয়েছে, যেখানে প্রায় ১০ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছেন। খবর দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের।
তেল আবিবের সমাবেশ ছাড়াও জেরুজালেম, হাইফা, বেয়ারশেবাসহ অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ হয়েছে, যেখানে প্রতিবাদকারীরা রাস্তা ও মহাসড়ক অবরোধ করে যুদ্ধ অবসানের দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার (১৭ আগস্ট) দিনভর বিক্ষোভ চলাকালীন অন্তত ৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তেল আবিবের সমাবেশ শেষে আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিক্ষোভের দিনটিতে দেশজুড়ে ধর্মঘটও পালিত হয়। শত শত স্থানীয় সরকারি কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রযুক্তি কোম্পানি এই ধর্মঘটে অংশ নেয়। তবে, ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়ন ‘হিস্টাড্রুট’ এই ধর্মঘটে যোগ দেয়নি।
তেল আবিবের হোস্টেজেস স্কয়ারের সমাবেশে জিম্মি রম ব্রাস্লাভস্কি ও নিমরোদ কোহেনের বাবা-মা আবেগময় বক্তব্য রাখেন। জিম্মি রম ব্রাস্লাভস্কির বাবা ওফির ব্রাস্লাভস্কি অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে সরকার রাজনৈতিক কারণে বন্দি অবস্থায় ফেলে রেখেছে। তিনি বলেন, আমার রমের সময় নেই, জিম্মিদের সময় নেই।
জিম্মি নিমরোদ কোহেনের বাবা ইয়েহুদা কোহেন বলেন, আমার ছেলে নিমরোদ কষ্ট পাচ্ছে। যদি নেতানিয়াহুর সরকার একটি বিস্তৃত চুক্তির মাধ্যমে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে ও যুদ্ধ শেষ করতে না পারে, তাহলে তাদের পদত্যাগ করা উচিত।

বিক্ষোভের মধ্যেই হিব্রু মিডিয়া জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হামাসের সঙ্গে একটি আংশিক যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি-মুক্তি চুক্তি বিবেচনা করতে প্রস্তুত।
চ্যানেল ১২-এর খবরে একজন জ্যেষ্ঠ ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, যদি হামাস গ্রহণযোগ্য শর্তে আংশিক চুক্তিতে রাজি হয়, তাহলে ইসরায়েল এটি বিবেচনা করতে পারে। তবে, নেতানিয়াহুর শীর্ষ উপদেষ্টা রন ডার্মার যেকোনো আংশিক চুক্তির বিরোধিতা করছেন। তার লক্ষ্য হলো, ট্রাম্পের কাছ থেকে যুদ্ধের একটি বিস্তৃত সমাপ্তির শর্তাবলির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা পাওয়া।

যদি একটি আংশিক চুক্তি কার্যকর হয়, তাহলে ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারে, যার মধ্যে জীবিত জিম্মিদের অর্ধেক ও মৃত বন্দিদের অর্ধেককে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
বর্তমানে হামাস ৫০ জন জিম্মিকে ধরে রেখেছে বলে জানা গেছে, যার মধ্যে অন্তত ২৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।