ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ভূখন্ডের নিয়ন্ত্রণসহ যা চাইছেন পুতিন

আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রস্তাবের একটি বিস্তারিত রূপরেখা প্রকাশ হয়েছে। মস্কোর চিন্তাভাবনা সম্পর্কে অবহিত একাধিক সূত্রের মতে, এই প্রস্তাবে রাশিয়া ইউক্রেনের কিছু দখলকৃত অংশ ছেড়ে দিতে রাজি হলেও এর বিনিময়ে কিয়েভকে তাদের পূর্বাঞ্চলীয় ভূখণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছেড়ে দিতে হবে, যা বর্তমানে মস্কো দখল করতে পারেনি। খবর রয়টার্সের।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোমবার (১৮ আগস্ট) ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে এই প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আলাস্কার বৈঠকের পর ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি ও পুতিন ভূমি হস্তান্তর এবং নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এ বিষয়ে তারা অধিকাংশ বিষয়ে জোরালোভাবে একমত হয়েছেন। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমরা একটি চুক্তির খুব কাছাকাছি। তবে ইউক্রেনকে এ বিষয়ে রাজি হতে হবে। হয়তো তারা ‘না’ বলবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রগুলো জানিয়েছে, পুতিনের প্রস্তাবটি একটি যুদ্ধবিরতির চেয়েও বেশি কিছু, যা ইউক্রেনের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। এই প্রস্তাবে রাশিয়া ইউক্রেনের উত্তরের সুমি ও খারকিভ অঞ্চলের প্রায় ৪৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা ফিরিয়ে দিতে প্রস্তুত। এর বিনিময়ে কিয়েভকে পূর্বাঞ্চলীয় ডোনেটস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যেতে হবে। ইউক্রেন অবশ্য ডোনেটস্ক থেকে পিছিয়ে আসার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে, কারণ এটি তাদের প্রতিরক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা কাঠামো হিসেবে কাজ করে।
এ ছাড়াও, প্রস্তাবে রাশিয়া চায়— আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলো ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার সার্বভৌমত্বকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিক। একই সঙ্গে, মস্কো তাদের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও আশা করছে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, ইউক্রেনকে ন্যাটো সামরিক জোটে যোগদান থেকে নিষিদ্ধ করা হবে। তবে, পুতিন ইউক্রেনকে কোনো ধরনের নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিতে ইচ্ছুক বলে মনে হচ্ছে, যদিও তার বিস্তারিত রূপ এখনো অস্পষ্ট।
ট্রাম্পও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে এই ধরনের আলোচনা করেছেন, যা সাধারণত ন্যাটো জোটের সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য।
রাশিয়ার প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের কিছু অংশে বা পুরো ইউক্রেনে রাশিয়ান ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসেবে মর্যাদা দিতে হবে। একই সঙ্গে, রাশিয়ার অর্থোডক্স চার্চকে কোনো বাধা ছাড়াই স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। তবে ইউক্রেন এই চার্চের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছে, তারা রাশিয়ার পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি ও বিভিন্ন ধরনের প্রচারণামূলক কাজে জড়িত।