যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে গোলার শব্দ

চলমান সংঘাতের চতুর্থ দিনে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। এরপরও স্থানীয় সময় আজ রোববার (২৭ জুলাই) দুই দেশের সীমান্তে পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সংবাদকর্মীরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।
এএফপির সাংবাদিকেরা জানান, আজ ভোর থেকেই কম্বোডিয়ার সামরাং শহরে ঘনঘন গোলার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। সংঘর্ষের জায়গা থেকে এই শহরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার।
কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভোর ৪টা ৫০ মিনিটের দিকে দুটি পুরোনো মন্দিরের কাছে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।
এর আগে গতকাল শনিবার (২৬ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের নেতারা দ্রুত যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন।
ট্রাম্পের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত। তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের সঙ্গে চলমান সীমান্ত সংঘাত থামাতে তার দেশ যুদ্ধবিরতির আলোচনায় আগ্রহী।
হুন মানেত আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে তার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলবেন এবং থাই সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করবেন। তবে তিনি ব্যাংকককে সতর্ক করে বলেছেন, যেন কোনো চুক্তি ভঙ্গ না হয়।

গতকাল স্কটল্যান্ড সফরে থাকা ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে লেখেন, থাইল্যান্ডের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে এই মাত্র কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললাম। পরে আরেকটি পোস্টে তিনি বলেন, এই মাত্র থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলো। এটি খুবই ভালো একটি আলাপচারিতা ছিল। কম্বোডিয়ার মতো থাইল্যান্ডও দ্রুত যুদ্ধবিরতি চায়।
ট্রাম্প আরও লেখেন, দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর যুদ্ধবিরতি, শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ স্বাভাবিক বলেই মনে হচ্ছে। শিগগিরই তা আমরা দেখতে পাব। লড়াই না থামলে দুই দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তির কোনো অগ্রগতি হবে না।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচাইয়াচাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে বলেছেন, থাইল্যান্ড নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত। তবে তারা কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে আন্তরিক মনোভাব দেখতে চায়।
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্ত বিরোধ শত বছরের বেশি পুরোনো। গত মে মাসে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। যার জের ধরে বৃহস্পতিবার থেকে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। শনিবার পর্যন্ত এই সংঘাতে দুই দেশের অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছে। সীমান্ত এলাকা থেকে ১ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গত শুক্রবার এই সংঘাত নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। সেখানে জাতিসংঘে কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূত চেয়া কেও অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।