পাকিস্তানকে হেসেখেলে হারাল বাংলাদেশ

সিরিজ শুরুর আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস জানিয়েছিলেন, আত্মবিশ্বাসী তার দল। শ্রীলঙ্কায় সিরিজ জিতে মানসিকভাবে এগিয়ে আছেন তারা। মাঠের ক্রিকেটে অধিনায়কের কথার সত্যতা মিলেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে বাংলাদেশ পেয়েছে সহজ জয়। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ রোববার (২০ জুলাই) লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা পেয়েছে ৭ উইকেটের জয়।
টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে তারা ১৯.৩ ওভারে অলআউট হয় ১১০ রানে। জবাবে ১৫.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ১১২ রান।
তুলনামূলক অল্প রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে যাচ্ছেতাই। দ্রুত সাজঘরে ফিরে গেছেন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। প্রথম ওভারে তামিমকে ফখর জামানের ক্যাচ বানান সালমান মির্জা। তামিমের ব্যাট থেকে আসে মোটে ১ রান। লিটনকেও বিদায় করেন সালমান। ১ রানে লিটন ক্যাচ দেন খুশদিল শাহর হাতে।
সাত রানে দুই উইকেট হারিয়ে যখন ব্যাকফুটে বাংলাদেশ, তখন হাল ধরেন পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহিদ হৃদয়। তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৭৩ রান। এটিই ঘুরিয়ে দেয় ম্যাচের মোড়। আব্বাস আফ্রিদির বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৩৭ বলে ৩৬ রান করেন হৃদয়।
একপ্রান্ত আগলে রেখে অর্ধশতক তুলে নেন ইমন। ৩৯ বলে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কায় ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। মাঠ ছাড়েন দলকে ম্যাচ জিতিয়েই।
২০১৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরেই টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ জিতলেও সেটি ছিল দুদলের দ্বিতীয় সারির দল। সেই হিসেবে দীর্ঘ ৯ বছর পর পাকিস্তানকে ক্ষুদ্র সংস্করণে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এর আগে একাদশে জায়গা পেয়েই উইকেট শিকার করেন তাসকিন আহমেদ। ওপেনার সাইম আইয়ুবকে মুস্তাফিজুর রহমানের ক্যাচ বানান তাসকিন। সাঈম করেন ৬ রান। বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ হারিসকে সাজঘরের পথ দেখান শেখ মেহেদি। ৪ রানে শামীম হোসেনের হাতে ক্যাচ দেন হারিস। অধিনায়ক আগা সালমানকে ৩ রানে আউট করেন তানজিম সাকিব। উইকেটের পেছনে সালমান হন লিটনের তালুবন্দি।
পাওয়ার প্লেতে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে বিদায় নেন হাসান নাওয়াজ। রানের খাতা খোলার আগে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে রিশাদ হোসেনের ক্যাচে পরিণত হন। পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে রানআউট হন মোহাম্মদ নাওয়াজ। মাত্র ৩ রান করেন তিনি। ৪৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হেয়ে পড়ে পাকিস্তান।
দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন ওপেনার ফখর জামান। তবে, দলীয় ৭০ রানে বিদায় নেন তিনি। রানআউট হওয়ার আগে ফখর খেলেন ৩৪ বলে ৪৪ রানের ইনিংস। ধীরলয়ে ব্যাটিং করে খুশদিল শাহ করেন ২৩ বলে ১৭। তাকে রিশাদের ক্যাচ বানান মুস্তাফিজ। শেষ দিকে পাকিস্তানের পুঁজি বাড়ান আব্বাস আফ্রিদি। তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ২২ রান।
বাংলাদেশের পক্ষে ২২ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন তাসকিন। ৬ রানে ২ উইকেট নেন মুস্তাফিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান : ১৯.৩ ওভারে ১১০/১০ (ফখর ৪৪, আইয়ুব ৬, হারিস ৪, সালমান ৩, হাসান ০, নাওয়াজ ৩, খুশদিল ১৭, আব্বাস , ফাহিম ৫, মির্জা ০, আবরার ০*; মেহেদি ৪-০-৩৭-১, তাসকিন ৩.৩-০-২২-৩ , সাকিব ৪-০-২০-১, মুস্তাফিজ ৪-০-৬-২, শামীম ১-০-২-০, রিশাদ ৩-০-১৯-০)
বাংলাদেশ : ১৫.৩ ওভারে ১১২/৩ (তামিম ১, ইমন ৫৬* , লিটন ১, হৃদয় ৩৬, জাকের ১৫* ; সালমান ৩.৩-০-২৩-২, আইয়ুব ২-০-১৬-০, আশরাফ ৩-০-২৯-০, আবরার ৪-০-২০-০, আব্বাস ২-০-১৬-১, নাওয়াজ ১-০-৮-০)
ফল : বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী।