নির্বাচনের তারিখ ঠিক রেখে জাকসুর পুনঃতফসিল

গত ২৬ জুন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান ঘোষিত ১১ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঠিক রেখে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। একই দিন ভোট গণনা ও ফল প্রকাশ করা হবে। এর আগে গত মে মাসে জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল।
আজ রোববার (১০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সিনেট কক্ষে এই পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়।
পুনঃতফসিল ঘোষণা করেন জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান। এ সময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. খো. লুৎফুল এলাহী, ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘পুনঃতফসিল অনুযায়ী ১০ আগস্ট রাত ১২টার মধ্যে খসড়া ভোটার তালিকা ও আচরণবিধি প্রকাশ করা হবে। খসড়া ভোটার তালিকা সম্পর্কে আপত্তি গ্রহণের শেষ তারিখ ১৪ আগস্ট বিকেল ৪টা, খসড়া আচরণবিধি সম্পর্কে মতামত গ্রহণের শেষ তারিখ ১৪ আগস্ট বিকেল ৪টা, ১৭ আগস্ট চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ও চূড়ান্ত আচরণবিধি প্রকাশ, ১৮ আগস্ট মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, মনোনয়নপত্র জমা ১৮ থেকে ১৯ আগস্ট।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২১ আগস্ট, খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ২৫ আগস্ট, মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিষয়ে এবং বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন গ্রহণ ২৬ আগস্ট, ২৭ আগস্ট আপিল শুনানি গ্রহণ ও আপিলের রায় ঘোষণা, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৮ আগস্ট, প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ২৯ আগস্ট, নির্বাচনি প্রচারণা চলবে ২৯ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ এবং একই দিন ভোট গণনা ও ফল প্রকাশ করা হবে।’
এ সময় জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য ও জাবি প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদ করতে পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। বহিরাগতরা যেন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য আমাদের নিরাপত্তারক্ষীরা সর্বাত্মকভাবে কাজ করবে।’
এ বিষয়ে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা চেয়ে রাশিদুল আলম বলেন, ‘একটি সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সহায়তাও নেওয়া হবে।’
গত ২৬ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সভা শুরু হয়ে দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা পর আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচনের এই তারিখ ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
উপাচার্য বিচারকার্য সম্পন্ন করতে পুনরায় সময় চান। এরপর উপস্থিত প্রশাসনের সবার সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে বিচার ও জাকসু নির্বাচনের নতুন রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।
নতুন ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, ৩ আগস্টের মধ্যে জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের সাময়িক বহিষ্কৃতদের চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত, একই দিনে জাকসুর তফসিল ঘোষণা, ৩১ আগস্ট হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত এবং ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হয়।
জাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯২ সালে। ১৯৯৩ সালে সিন্ডিকেটে হট্টগোলের কারণে তখন থেকে বন্ধ আছে জাকসুর কার্যক্রম। ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মোট আটবার জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নবমবারের মতো জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর।