চীনে সেরা গ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড পেলেন নওগাঁর তারিকুল

চীনের বিখ্যাত বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘সেরা গ্র্যাজুয়েট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন নওগাঁর রাণীনগরের সন্তান মো. তারিকুল ইসলাম (তাজ)। অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অসাধারণ ফলাফল ও গবেষণায় অবদানের জন্য তিনি এই সম্মাননা লাভ করেন।
চীনের বেইজিং শহরের বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ক্যাম্পাসে স্থানীয় সময় সোমবার (৩০) দুপুর আড়াইটায় অনুষ্ঠিত সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ঝাও ওয়েই শেং তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের উপপরিচালক প্রফেসর ঝাং ঝিহুই, আন্তর্জাতিক স্কুলের উপ-ডিন প্রফেসর উ সিয়াওজুন এবং তার গবেষণা তত্ত্বাবধায়ক প্রফেসর সু ইউয়ান মিং।
তারিকুল ইসলাম এই সম্মাননা অর্জনের মাধ্যমে শুধু নিজেই নন, তার তত্ত্বাবধায়ক প্রফেসর সু ইউয়ান মিংকেও গৌরবান্বিত করেছেন। কারণ, তারিকুলের সাফল্যের ফলস্বরূপ প্রফেসর মিংও সেরা শিক্ষক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।
এর আগেও তারিকুল চীনেই হুনান প্রদেশের চাংশা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক (অনার্স) সম্পন্ন করে সেরা গ্র্যাজুয়েট হন।
তার গবেষণার বিষয় ছিল- বিমানের নকশা, ড্রোন ও মনুষ্যবিহীন আকাশযান, বৈদ্যুতিক উল্লম্ব অবতরণ যান, অ্যারোডাইনামিক্স এবং মেশিন লার্নিং। বর্তমানে তিনি বেইজিংয়ের একটি আন্তর্জাতিক এ্যারোস্পেস কোম্পানিতে এয়ারক্রাফট অ্যারোডাইনামিক ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তারিকুল বলেন, এই অর্জন আমি উৎসর্গ করছি আমার গাইড প্রফেসর সু ইউয়ান মিং, বাবা-মা, স্ত্রী এবং দেশের সিনিয়র ভাই ও বন্ধুদের প্রতি।
তারিকুল ইসলাম ১৯৯৮ সালের ১২ এপ্রিল নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার বেলোবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মো. বুলেট হোসেন রাণীনগর আল-আমিন দাখিল সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক এবং মা মোছা. সুলতানা মোফতারুন বেগম একজন শিক্ষিকা।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী তারিকুল প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন বেলোবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়ে ভর্তি হন রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। ২০১৫ সালে এসএসসি ও ২০১৭ সালে সাভার ল্যাবরেটরি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেন। কলেজ জীবনে ভালো ফলাফলের জন্য একাধিকবার সম্মাননা ও পুরস্কারও পেয়েছেন।
স্কলারশিপের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে চীনে পাড়ি জমান তারিকুল। তার এই অসামান্য সাফল্যে শুধু পরিবার নয়, পুরো এলাকা আজ গর্বিত। আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী তার জন্য দোয়া ও শুভকামনা জানিয়েছেন।