কাশ্মীর ইস্যুতে মোদিকে পূর্ণ সমর্থন রাহুল গান্ধীর

কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘যেকোনো পদক্ষেপে’ পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ভারতের বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। খবর এনডিটিভির।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে সর্বদলীয় বৈঠকের পর লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দল এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সরকার এ বিষয়ে যেকোনো পদক্ষেপ নিলে বিরোধীরা পূর্ণ সমর্থন দেবে।’
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘আমরা জম্মু ও কাশ্মীরে দ্রুত শান্তি পুনরুদ্ধার করতে চাই।’ আহতদের অবস্থা জানতে রাহুল গান্ধী শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) কাশ্মীরের অনন্তনাগের জেলা হাসপাতালে যান।
তৃণমূল কংগ্রেস সংসদ সদস্য সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা কেন্দ্রের সঙ্গে আছি। পুরো দেশ ঐক্যবদ্ধভাবে এই লড়াইয়ে নামবে। সব রাজনৈতিক দলের প্রধানরা প্রধানমন্ত্রীকে এই বার্তা দিয়েছেন।’ তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেরও আহ্বান জানান।
সম্প্রতি কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার বাইসারানের মনোরম তৃণভূমিতে ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। এই এলাকাটি ‘ছোট সুইজারল্যান্ড’ নামেও পরিচিত। হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। নিহত ২৫ জন পর্যটকের মধ্যে একজন নেপালের নাগরিক ছিলেন। বাকিরা ভারতের ১৪টি রাজ্যের বাসিন্দা।
ভারত সরকার এই হামলার কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। ইতোমধ্যে সিন্ধু নদের পানি চুক্তি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা, আটারি সীমান্ত বন্ধ করা এবং বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত সব পাকিস্তানি নাগরিকের ভিসা বাতিলসহ বেশ কিছু অসামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সরকার সামরিক পদক্ষেপও নিতে পারে।

তবে সূত্র জানায়, সর্বদলীয় বৈঠকে সামরিক পদক্ষেপ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে সরকার গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের সব ভিসা, এমনকি চিকিৎসা ভিসাও বাতিল করেছে। এই সিদ্ধান্ত রোববার (২৭ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হবে।
জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তিসহ দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সব চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। পাকিস্তান তাদের হাইকমিশনে ভারতীয় কূটনৈতিক কর্মীদের সংখ্যাও কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, পহেলগাম হামলার পর ভারত সরকার কী পদক্ষেপ নেয় এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কোন দিকে যায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।