ক্লাব বিশ্বকাপ ফাইনাল : শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে পিএসজির মুখোমুখি চেলসি

লুইস এনরিকের অধীনে পিএসজি রয়েছে দারুণ ছন্দে। তারকা নির্ভর দল থেকে বের হয়ে এসে তারুণ্য নির্ভর একটি দল গড়েছে পিএসজি। সেই দল নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন এনরিকে। তবে, পিএসজির সাম্প্রতিক খেলা দেখে মনে হতেই পারে প্রত্যেকে এক একজন তারকা। অন্যদিকে, বিশাল আকারের স্কোয়াড নিয়ে মৌসুমজুড়ে চেলসির উত্থানপতন দেখেছে সমর্থকরা। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী পিএসজি এবং উয়েফা কনফারেন্স লিগজয়ী চেলসি মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে।
আজ রোববার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫-এর ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট-জার্মেই (পিএসজি) ও ইংলিশ জায়ান্ট চেলসি।
সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে চেলসির চেয়ে কিছুটা এগিয়েই থাকবে পিএসজি। ঘরোয়া লিগের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর চ্যাস্পিয়ন্স লিগের শিরোপাও জিতেছে তারা। সব মিলিয়ে ট্রেবল জিতে বিশ্বকাপের মিশনে এসেছে প্যারিসিয়ানরা।
তবে, এবারই প্রথমবারের মতো ক্লাব ফুটবলের বৈশ্বিক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের লক্ষ্যে মাঠে নামছে পিএসজি। এর আগে কখনো ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি ক্লাবটির। ইংলিশ ক্লাব চেলসির জন্য এটি তৃতীয় ফাইনাল। আগের দুই ফাইনালের একটিতে তারা শিরোপার দেখা পেয়েছে।
পরিসংখ্যানও এগিয়ে রাখছে পিএসজিকেই। এর আগে ৯ বারের দেখায় ৩টি ম্যাচে জয় পেয়েছে পিএসজি, ২টিতে চেলসি এবং ড্র হয়েছে ৩ ম্যাচ। দুই দলের সর্বশেষ চার দেখায় পিএসজির জয় শতভাগ। ফরাসি ক্লাবটি জয় পেয়েছে ২টি ম্যাচে। বাকি ২টি ম্যাচ ড্র হয়েছে।
তবে, পরিসংখ্যানের বাইরে গিয়ে জয়ের আশ চেলসি কোচ এনজো মারেস্কার। ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য বিশাল অর্জন। প্রিমিয়ার লিগে সেরা চার, কনফারেন্স লিগে চ্যাম্পিয়ন এবং এখন ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল— আমরা দারুণ একটি মৌসুম কাটিয়েছি। শেষ পর্যন্ত আমরা মৌসুমের শেষ ম্যাচটি খেলতে যাচ্ছি এবং আশা করছি শেষ ম্যাচটিও জিততে পারব।’
পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে তার দলের ঐতিহাসিক সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামছেন। ফাইনালের আগে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য একটি বিশেষ মৌসুম, একটি বিশেষ মুহূর্ত। সামনে আর মাত্র একটি ধাপ বাকি— চেলসির মতো দুর্দান্ত এক দলের বিপক্ষে। এখন প্রস্তুতির সময়। আমরা চাই, আমাদের ক্লাবের ইতিহাস গড়তে।’
ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সেমিফাইনালে ফ্যাবিয়ান রুইজের জোড়া গোলে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে পিএসজি। এর আগে শেষে ষোলোতে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি এবং কোয়ার্টারে জার্মান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখের মতো টিমের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে এসেছে এনরিকের শিষ্যরা। গ্রুপ পর্বে তারা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও সিয়াটল সাউন্ডার্সকে হারিয়ে শীর্ষে ছিল, যদিও ব্রাজিলিয়ান বোটাফোগোর কাছে একটি ম্যাচ হোঁচট খায়।
চেলসি কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে দুই ব্রাজিরিয়ান ক্লাব পালমেইরাসকে ২-১ ও ফ্লুমিনেন্সেকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে। এছাড়া শেষ ষোলোতে তারা পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকাকে হারিয়েছে। গ্রুপ পর্বে তারা এলএ গ্যালাক্সি ও এস তিউনিসকে হারালেও ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লেমেঙ্গোর বিপক্ষে হেরে যায়।
দুই দলের এই টুর্নামেন্টে একটি মিল রয়েছে। গ্রুপ পর্বে তারা একটি করে ম্যাচ হেরেছে এবং কাকতালীয়ভাবে সেই দুটি দলই ব্রাজিলের।