আওয়ামী লীগ কোনো দল না। আওয়ামী লীগ একটি রেজিম। এই রেজিমকে আমাদের নির্মূল করতে হবে। আওয়ামী লীগের যারা খুন-গুম করেছে, তাদের দেখতে পেলেই পুলিশে ধরিয়ে দিন।

আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে ঝিনাইদহ শহরে একটি রেস্টুরেন্টে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।

যুব অধিকার পরিষদ ‘বৈষম্যহীন সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠনে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

রাশেদ খান বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো আপস করা যাবে না। আপস থাকতে হবে নিজেদের মধ্যে। শুধু শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। একটি অধ্যায়ের শেষ হয়েছে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত হাসিনার ফ্যাসিবাদ তন্ত্র ভেঙে খান খান না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত বিপ্লবের সমাপ্তি ঘটবে না। আওয়ামী লীগের কেও ডামি মামি সতন্ত্র ইলেকশনে অংশ নিতে পারবে না। প্রতিহত করা হবে তাদের।

সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ উল্লেখ করে গণঅধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, সরকার গঠনের আগে জুলাই বিপ্লবের সহযোদ্ধাদের জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু তারা কথা না শুনে মাজাভাঙা ব্যক্তিদের দিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছে। যারা দেশ চালাতে পারছে না।

রাশেদ খান আরও বলেন, শেখ মুজিব একবার ৭১ পরবর্তী দেশে গণহত্যা চালিয়েছিল। জাসদসহ বিভিন্ন দলের ৩০ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। ২৪ সালে এসে হাসিনার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বার গণহত্যা চালিয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ দুই বার দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। তাই আমরা আর তৃতীয়বার আওয়ামী লীগকে গণহত্যার সুযোগ দেব না। জুলাই বিপ্লবে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্য ধরে রাখতে না পারে, তাহলে বিপ্লব ব্যর্থ হবে। আর বিপ্লব ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগ আবার দেশে ফিরে কাউকে রেহাই দেবে না। সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলাবে। তাই নিজেদের মধ্যে একতা ধরে রাখার আহ্বান জানান রাশেদ খান।

রাশেদ খান অভিযোগ করে বলেন, ঝিনাইদহে দলীয় পরিচয়ে চাঁদাবাজি, দখলদারত্ব, টেন্ডারবাজি ও দুর্নীতি হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদদের আত্মত্যাগ নসাৎ হয়ে যাবে। দেশে এখন তারুণ্যনির্ভর পরিবর্তনের রাজনীতি শুরু হয়েছে। যারা রাজনীতি করেন, তাদের ভুলে গেলে চলবে না, এখন আর হাসিনার আমলের রাজনীতি নেই। সম্প্রীতি ও ভালোবাসার নজির তৈরি করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি জনগনের নেতা হবেন নাকি জনগণ কর্তৃক গধিকৃত হবেন।

জাতীয় সরকারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে রাশেদ খান বলেন, দেশ চালাতে জাতীয় সরকার লাগবে। জননেতা তারেক রহমান যে ৩১ দফা দিয়েছেন সেটা শুধু বিএনপির নয়, আমাদেরও। কাজেই জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার আহ্বান জানান তিনি।

কতিপয় উপদেষ্টার প্রতি হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে রাশেদ খান বলেন, আপনারা কেউ কেউ কিংস পার্টি গঠন করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এটা যদি আপনারা করেন তবে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে দেশের মানুষ। কিংস পার্টিকে দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।

স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে ছয়জন সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন উল্লেখ করে উপস্থিত সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাশেদ খান বলেন, আপনারা ভয়ে লিখছেন না। চাঁদাবাজি, দখলবাজি লুটপাটের চিত্র তুলে ধরে লিখুন। ভয় নেই, আগে লিখেছেন এখন কেন লিখবেন না? দুর্নীতি অন্যায় তুলে ধরুন আমরা (গণঅধিকার পরিষদ) আপনাদের সঙ্গে থাকব।