ডিএসই : লেনদেনে সেরা বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ১৩৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে সদ্য সমাপ্ত সপ্তাহে, যা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মোট লেনদেনের তিন দশমিক ৮৩ শতাংশ। লেনদেনের শীর্ষে উঠা এ কোম্পানির সপ্তাহটিতে শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে চার টাকা ১৮ শতাংশ। এতে কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়েছে ৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, ডিএসইতে গত বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের শেয়ারের সমাপনী দর দাঁড়ায় ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা। আগের সপ্তাহের ৩১ জুলাই কোম্পানিটির শেয়ারের সমাপনী দর ছিল ১১৪ টাকা ৭০ পয়সা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে চার টাকা ৮০ পয়সা। গত বৃহস্পতিবার মোট শেয়ারের মাধ্যমে বাজারে মূলধন দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮২২ কোটি ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৮০ টাকা, যা আগের সপ্তাহের ৩১ জুলাই ছিল এক হাজার ৭৪৯ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে মূলধন বেড়েছে ৭৩ কোটি ২১ লাখ ৬৮ হাজার ১৯২ টাকা। গেল সপ্তাহে ৪১৩টি কোম্পানির তিন হাজার ৬৪৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সেখানে সপ্তাহটিতে কোম্পানিটির ১৩৯ কোটি ৬৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের তিন দশমিক ৮৩ শতাংশ।
গত বৃহস্পতিবার কোম্পানিটির পিই রেশিও দাঁড়ায় ছয় দশমিক ২৩ পয়েন্টে। পিই রেশিও অনুসারে কোম্পানিতে বিনিয়োগ নিরাপদে রয়েছে। পুঁজিবাজারের কোনো কোম্পানির পিই রেশিও যদি সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে, তাহলে সেখানে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ ধরে নেওয়া হয়। এ ছাড়া পিই রেশিও ডিজিট যদি ১৫ পয়েন্ট পর্যন্ত অবস্থান করে, তবে সেখানেও বিনিয়োগ নিরাপদ বলে ধরা হয়ে থাকে। তবে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসাবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সেই হিসেবে ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। অর্থাৎ পিই রেশিও ৪০ এর ওপরে গেলে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। পিই রেশিও যত বাড়বে, ঝুঁকির মাত্রা তত বাড়তে থাকবে।
কোম্পানি সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে চার টাকা ৯৫ পয়সা। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে (জানুয়ারি-মার্চ) শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল চার টাকা ৪৭ পয়সা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১৪ টাকা ৩৮ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-মার্চ) শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ১১ টাকা শূন্য পাঁচ পয়সা। কোম্পানিটির তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছে ১৯ টাকা ৫৮ পয়সা। আগের অর্থবছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ ছিল ১৫ টাকা ৮৪ পয়সা। গত ৩১ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৯৮ টাকা ৪৯ পয়সা।
এর আগে ২০২৩-২৪ সমাপ্ত অর্থবছরে (জুলাই-জুন) জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। কোম্পানিটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২২ ডিসেম্বর। কোম্পানিটির রেকর্ড ডেট ছিল গত ২৪ নভেম্বর। ওই বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছিল ১৬ টাকা ৩৭ পয়সা। সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ হয়েছিল ৩১ টাকা আট পয়সা। শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছিল ১০১ টাকা ৯৭ পয়সা।
১৯৭৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের। ‘এ’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন এক হাজার কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১৫২ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১৫ কোটি ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪০টি। রিজার্ভে রয়েছে ৯৩৮ কোটি ছয় লাখ টাকা। ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির সরকারের হাতে ৫২ দশমিক ১০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ২১ দশমিক ৩৪ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।