নাট্যশিল্পী প্রশান্ত হালদারের বাড়িতে আগুন : শিল্পী-সাহিত্যিক-সংস্কৃতিকর্মীদের প্রতিবাদ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে নাট্যশিল্পী প্রশান্ত হালদারের বাড়িতে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ৬২ জন শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী। তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।
থিয়েটার বিষয়ক পত্রিকা ক্ষ্যাপার নির্বাহী সম্পাদক অপু মেহেদী আজ সোমবার (২৬ মে) বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছি কতিপয় উগ্র মানুষ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় দুষ্কর্মে লিপ্ত হয়েছেন। এইসব অনাকাঙ্ক্ষিত ও প্রতিক্রিয়াশীল কর্মকাণ্ডের বিচার না হওয়ায় দুষ্কৃতকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে। ফলে সামাজিক সম্প্রীতি ও শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে।”
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নাট্যশিল্পী, কবি ও কথাশিল্পী প্রশান্ত হালদারের ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি নানা রকম ‘সন্দেহের অবকাশ’তৈরি করেছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
বিবৃতিতে তারা বলেন, “আমরা জেনেছি বেশ কিছুদিন থেকে অজ্ঞাতনামা কে বা কারা রাতের অন্ধকারে প্রশান্ত হালদারের বাড়ির জানালায় উসকানিমূলকভাবে ৩-৪ বার মানুষের মল মাখিয়ে যায়। বাড়ির উঠানে হাড় হাড্ডি নিক্ষেপ করে, একাধিকবার তাদের ঘরের চালে ইট ও ঢিল নিক্ষেপ করা হয়।”
পরিকল্পিতভাবে আগুন দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রশান্ত হালদারের পরিবার এবং তাদের প্রতিবেশিদের সঙ্গে কথা বলে আমরা ধারণা করছি, এই আগুন লাগার ঘটনা পূর্বাপর এইসব ঘটনার ধারাবাহিকতা। সামাজিক শান্তি বিনষ্টের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এই আগুন দেওয়া হয়েছে। আগুনে বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার থেকেও এই পরিবার যে মানসিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে তা অমানবিক। পুরো পরিবার আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছে।”
সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে, “এর পেছনে কারা, কী উদ্দেশ্যে এটা করেছে, তাদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। আমরা দাবি করছি দ্রুত এই বিষয়ের সুষ্ঠু তদন্ত হতে হবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম, মোহাম্মদ বারী, অলোক বসু, নাট্যগবেষক বাবুল বিশ্বাস, কথাসাহিত্যিক আহমাদ মোস্তফা কামাল, কবি আলফ্রেড খোকন, নাট্যশিক্ষক ইউসুফ হাসান অর্ক, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা আমিনুর রহমান মুকুল, নাট্যশিক্ষক সাইদুর রহমান লিপন, নাট্যনির্দেশক ও শিক্ষক কামালউদ্দিন কবির, নাট্যনির্দেশক ও অভিনয়শিল্পী ত্রপা মজুমদার, নাট্যসংগঠক আখতারুজ্জামান, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা অনন্ত হিরা, শিক্ষক ও নাট্যকার শহিদুল মামুন, চিত্রশিল্পী শাহীনুর রহমান, উপস্থাপক ও আবৃত্তিশিল্পী দীপ্তি চৌধুরী, অভিনেত্রী ও নাট্যনির্দেশক নূনা আফরোজ, আইরিন পারভীন লোপা, থিয়েটারওয়ালা পত্রিকার সম্পাদক হাসান শাহরিয়ার, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক রাজীব নূর, নাট্যনির্দেশক মোহাম্মদ আলী হায়দার, শিক্ষক ও নাট্যকার সামিনা লুৎফা নিত্রা, নাট্যকার অপু শহীদ, নাট্যকার ও নির্দেশক সাইফ সুমন, রেজা আরিফ, কবি মাজহার সরকার, স্থপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সারা আফরীন, কামার আহমদ সাইমন, চলচ্চিত্র নির্মাতা জুয়েইরিযাহ মউ, নাট্যনির্দেশক বাকার বকুল, মুক্তনীল, শামীম সাগর, শিক্ষক ও নাট্যকার আনন জামান, শিক্ষক ও নাট্যনির্দেশক সুদীপ চক্রবর্তী, আশিকুর রহমান লিয়ন, কথাসাহিত্যিক ও গবেষক রাখাল রাহা, সংস্কৃতিকর্মী পাভেল রহমান, কবি ও নাট্যকার অপু মেহেদী, নাট্যশিল্পী কাজী রোকসানা রুমা, কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান, মোজাফফর হোসেন, সুমন মজুমদার, হামিম কামাল, পলাশ মজুমদার, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ, শিক্ষক আর রাজী, প্রকাশক সাঈদ বারী, শিক্ষক সায়মা আলম, অভিনেতা ও সংগঠক কামাল বায়েজীদ, লেখক ও সংগঠক নাহিদ হাসান, কবি ও সাংবাদিক শিমুল সালাহ্উদ্দিন, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী প্রশান্ত অধিকারী, আলোক পরিকল্পক ঠান্ডু রায়হান, কবি ও প্রাবন্ধিক সৈকত হাবীব, কবি মাশুক শাহী, নাট্যশিল্পী নাজনীন চুমকী, আলোক পরিকল্পক অম্লান বিশ্বাস, অভিনেতা ও সংগঠক আলী মাহমুদ, কবি রিসি দলাই, নাট্যশিল্পী ফৌজিয়া করিম অনু, সাকিল সিদ্ধার্থ এবং নাট্যনির্দেশক ও কথাসাহিত্যিক রেজানুর রহমান।