ইশরাককে দ্রুত শপথ না করানো হলে বৃহত্তর আন্দোলন : সালাহউদ্দিন আহমেদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ অন্তর্বর্তী সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, এই সরকার গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বলছে ও কাজ করছে। দ্রুত জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা না হলে ড. ইউনূস তার সম্মান রক্ষা করতে পারবেন না। একইসঙ্গে তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে দ্রুত শপথ গ্রহণ না করানো হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
আজ সোমবার (১৯ মে) বিকেলে বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সদস্য ফরম সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। সিলেট শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই সরকার ঘোলা করে পানি খায়। নির্বাচনের কথা বললে তারা ক্ষুব্ধ হন। উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতা ভোগের স্বপ্ন দেখছেন। চক্রান্ত করে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছেন। একজন নারী উপদেষ্টা দাবি করেছেন, তারা নাকি জনতা দ্বারা নির্বাচিত। প্রধান উপদেষ্টার উচিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, অন্যথায় তিনি নিজেও সম্মান রক্ষা করতে পারবেন না।’
এ ছাড়া আদালতের নির্দেশনা মেনে ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দ্রুত শপথ না করানো হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের পাহারাদার হচ্ছে বিএনপি। বিএনপি দুর্বল হলে বাংলাদেশও দুর্বল হবে।
‘যে মানুষ বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী, যিনি নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দেবেন, তিনিই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য হতে পারবে’ উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি এই দেশের প্রতিটি ধূলিকণাকে ধারণ ও লালন করে। বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮ কোটি জনগণ বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তা এখন ১৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বিএনপির কি এত অভাব পড়েছে যে আওয়ামী লীগ থেকে সদস্য আমদানি করতে হবে? যে আওয়ামী লীগের ডিএনএতে গণতন্ত্র নেই, তাদের কেন বিএনপির সদস্য হওয়ার জন্য আহ্বান করতে হবে? গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করেছে। আওয়ামী লীগ ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যাকারী ও তাদের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে। আজ পর্যন্ত তারা তাদের অপকর্মের জন্য কোনো ক্ষমা প্রার্থনা করেনি। ৫ আগস্ট রক্তাক্ত বিপ্লবের মাধ্যমে জনগণ তাদের উৎখাত করেছে। তাদের রাজনীতির কবর হয়েছে। তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘স্বৈরশাসন পতনের আগেই বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা ঘোষণা করেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্য ও শান্তির দেশ হিসেবে পরিচিত হবে।’
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছের সভাপতিত্বে ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কোষাধ্যক্ষ এম রাসেদুজ্জামান মিল্লাত। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, আরিফুল হক চৌধুরী, এম এ মালিক এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও সহসমবায়বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার। স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।