তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে পোল্ট্রি খামারে হিটস্ট্রোকে মরছে মুরগি

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ের ফলে পোল্ট্রি খামারে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলাজুড়ে প্রতিদিন শত শত মুরগি মারা যাচ্ছে হিটস্ট্রোকে। এতে খামারিরা পড়েছেন চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো মতলব উত্তরেও চলছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। দিনের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই। সঙ্গে রয়েছে দিনে-রাতে গড়ে ৫-৬ ঘণ্টা লোডশেডিং। এই দুইয়ের কারণে খামারগুলোতে তৈরি হয়েছে চরম সংকট।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মতলব উত্তরে ৩৫৭টি নিবন্ধিত পোল্ট্রি খামার রয়েছে। এর মধ্যে ৩১৫টি ব্রয়লার এবং ৪২টি লেয়ার ও দেশি জাতের খামার। গত এক সপ্তাহে উপজেলার ১৫-২০ শতাংশ খামারে গড়ে ১০০ থেকে ৩০০ করে মুরগি মারা গেছে।
গজরা গ্রামের খামারি ওয়ালীউল্ল্যা মজুমদার জানান, আমার খামারে ৮৮০টি মুরগি ছিল, ২ দিনে মারা গেছে ১২০টি। গরমে পানির অভাব, বাতাস নেই, এতে মুরগিগুলো একের পর এক মারা যাচ্ছে।
ঘনিয়ারপাড়ের সাদ্দাম হোসেন বলেন, ১০ দিন আগেও খামারে ৮০০টি মুরগি ছিল। একসাথে ৩০০টি মারা যাওয়ায় খামার বন্ধ করে দিয়েছি।
ফৈলাকান্দির খামারি হাবিব প্রধান জানান, ১ হাজার মুরগির মধ্যে গত ২ দিনে ১৫০টিরও বেশি মারা গেছে।
পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি বাবুল দেওয়ান বলেন, খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়লে আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হই। আমরা বিদ্যুৎ অফিসকে অনুরোধ করেছি, গরমের সময় অন্তত বিদ্যুৎ বন্ধ না রাখতে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মতলব উত্তর জোনের জেনারেল ম্যানেজার ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, প্রধান লাইনে সমস্যা থাকায় বিকল্প সংযোগে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। বর্ষায় ঝড়ের কারণে গাছ কাটার কাজ চলছে, তাই মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা লাগছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, হিটস্ট্রোক কোনো ভাইরাস নয়। তাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে মুরগি মারা যায়। খামারে ছায়া, বাতাস এবং ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করতে হবে। দিনে অন্তত ২-৩ বার ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় ওষুধ দিতে হবে।