ইসরায়েলি হামলা বন্ধ ও মানবিক করিডোর খুলে দিলে জিম্মিদের সাহায্যে রাজি হামাস

গাজায় ইসরায়েলি জিম্মিদের জন্য মানবিক সহায়তা দিতে রেড ক্রসের সঙ্গে শর্ত সাপেক্ষে কাজ করতে রাজি হয়েছে হামাস। রোববার (৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, ইসরায়েল স্থায়ীভাবে মানবিক করিডোর খুলে দিলে এবং ত্রাণ বিতরণের সময় বিমান হামলা বন্ধ করলে তারা সহযোগিতা করবে। খবর রয়টার্সের।
এই ঘোষণা এমন এক সময় আসলো, যখন হামাসের প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে একজন কঙ্কালসার ইসরায়েলি জিম্মিকে দেখা যায়, যেটি পশ্চিমা দেশগুলোতে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের জন্ম দেয়।
শনিবার হামাস দ্বিতীয় দিনের মতো ইসরায়েলি জিম্মি এভিয়াতার ডেভিডের একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিওতে ডেভিডকে নিজ কবর খুঁড়তে দেখা যায়। তার শরীর ছিল খুবই ক্ষীণকায় ও দুর্বল। ভিডিওর ক্যামেরা ধরে রাখা ব্যক্তির হাতে স্বাভাবিক মাংসপেশির গঠন ছিল— যা ভিডিওর বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স ভিডিওর তীব্র নিন্দা জানায়। ইসরায়েল জানায়, মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এ নিয়ে একটি বিশেষ অধিবেশন ডাকা হবে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয়, বর্তমানে ৫০ জন জিম্মি এখনও গাজায় রয়েছে, যাদের মধ্যে ২০ জনের জীবিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
হামাস এখন পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাকে জিম্মিদের কাছে যেতে দেয়নি। পরিবারের সদস্যরাও তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য জানেন না।
হোস্টেজেস ফ্যামিলিস ফোরাম এক বিবৃতিতে বলেছে, “হামাসের কথায় কোনো কিছু ঢেকে রাখা যাবে না। তারা ৬৬০ দিনের বেশি সময় ধরে নিরপরাধ মানুষদের অমানবিক অবস্থায় আটকে রেখেছে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “যতদিন তারা মুক্ত না হয়, হামাসের দায়িত্ব হলো তাদের যত্ন নেওয়া। যদি কেউ মারা যায়, তার দায় হামাসকেই নিতে হবে।”
রোববার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১৭৫ জন না খেয়ে মারা গেছে, যার মধ্যে ৯৩ জন শিশু।
এমন অবস্থায় ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, জ্বালানিবাহী কিছু ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক সাহায্য সংস্থা সিওজিএটি জানায়— ৪টি ট্যাংকারে করে জাতিসংঘের জ্বালানি গাজায় প্রবেশ করেছে, যা হাসপাতাল, বেকারি, রাঁধুনি ঘর এবং অন্যান্য জরুরি সেবায় ব্যবহৃত হবে।
তবে মিশর থেকে পাঠানো ১০৭ টন ডিজেলবাহী ২টি ট্রাক আদৌ গাজায় ঢুকেছে কি না, সে বিষয়ে কোনো নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

রোববার বেলজিয়ামের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা জর্ডানের সঙ্গে যৌথভাবে গাজায় আকাশপথে মানবিক সাহায্য ফেলা শুরু করেছে।
ফ্রান্সও শুক্রবার ৪০ টন সহায়তা আকাশপথে গাজায় পাঠিয়েছে।