ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপ-আমেরিকার আলোচনা ‘ইতিবাচক’ : ফ্রান্স

ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি নিয়ে প্যারিসে ইউরোপ ও আমেরিকার আলোচনাকে ‘ইতিবাচক প্রক্রিয়া’ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে ফ্রান্স। তিন বছর ধরে চলমান এ সংঘাত অবসানের প্রচেষ্টায় ইউরোপও জড়িত থাকতে চায়। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
এএফপি জানায়, প্যারিসে আলোচনার সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আবারও মার্কিন শান্তি পরিকল্পনার ওপর জোর দেন।
বৈঠকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি, জার্মানির কর্মকর্তা ও ইউক্রেনের মন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে তিন বছর ধরে চলমান যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির পুতিন ট্রাম্পের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমন প্রেক্ষাপটে প্যারিসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে, প্যারিসে আমরা একটি ইতিবাচক প্রক্রিয়া শুরু করেছি, যাতে ইউরোপীয়রা জড়িত। আগামী সপ্তাহে লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানি ও ইউক্রেনের দূতদের একটি নতুন বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মতে, রুবিও প্যারিস বৈঠকে আলোচিত বিষয় সম্পর্কে টেলিফোনে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভকে অবহিত করেন।
রুবিও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধের অবসান চায়। আমরা এখন সব পক্ষের সামনে একটি টেকসই ও স্থায়ী শান্তির রূপরেখা উপস্থাপন করেছি। প্যারিসে বৈঠকে উপস্থাপিত মার্কিন কাঠামোর প্রতি সবার আগ্রহ প্রমাণ করে, যদি সব পক্ষ একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, তাহলে শান্তি সম্ভব।
এক বিবৃতিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লাভরভ ইউক্রেন সংকটের মূল কারণগুলো ব্যাপকভাবে তুলে ধরার জন্য প্রতিপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে মস্কোর প্রস্তুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকের আলোকে ‘দ্রুত যোগাযোগের চ্যানেল’ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে লাভরভ ও রুবিও একমত হয়েছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্যারিসের আলোচনার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, ইউরোপে ‘প্রকৃত নিরাপত্তা’ নিশ্চিতের জন্য এই আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
শুক্রবার জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়েরমাক টেলিগ্রামে এক পোস্টে ইউক্রেনে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি অর্জনের প্রক্রিয়ায় প্রচেষ্টার জন্য ম্যাখোঁকে ধন্যবাদ জানান। তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ প্যারিসের বৈঠকটি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এর আগে ইউরোপীয়রা ‘যুদ্ধ চালিয়ে যেতে মনোযোগী’ ছিল বলে মনে হয়েছিল।
ফ্রান্স ও ব্রিটেন যেকোনো যুদ্ধবিরতিতে ইউক্রেনকে রক্ষা করতে সমন্বিত ইউরোপীয় প্রতিক্রিয়া চেয়েছিল। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা তাদের হতবাক করে দেয়।