পুতিনের মেয়েকে বিয়ে করেই সফল ব্যবসায়ী

রাশিয়ার ক্রীড়াবিদ কিরিল শামালভ। তিনি বিয়েও করেছেন এক নারী ক্রীড়াবিদকে। তবে দ্বিতীয়জনের আরেক পরিচয় তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ছোট মেয়ে। নাটকীয়ভাবে রাশিয়ার অন্যতম সফল ব্যবসায়ী বনে গেছেন শামালভ। অনেকে শামালভের সৌভাগ্যের পেছনে অন্য কারো হাত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত করেন।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিরিল শামালভ অবশ্য শুধু পুতিনের জামাতাই নন, একই সঙ্গে তিনি বন্ধুর ছেলেও। ২০১৩ সালে রাশিয়ার সেইন্ট পিটার্সবার্গের একটি অবকাশযাপন কেন্দ্রে পুতিনের ছোট মেয়ে ক্যাটরিনার সঙ্গে কিরিলের বিয়ে হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানস্থল ছিল কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়া। ওই বিয়ের মধ্য দিয়ে ৩১ বছর বয়সী কিরিলের উত্থান শুরু হয়।
একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ছিলেন কিরিল শামালভ। বিয়ের ১৮ মাসের মাথায়ই পরিবর্তন হয়েছে তাঁর। রাশিয়ার তেল ও তেল প্রক্রিয়াজাতকরণ রাসায়নিক দ্রব্যের প্রতিষ্ঠান সিবুর বড় অংশীদার হয়ে গেছেন কিরিল। ওই অংশের বর্তমান মূল্য দাঁড়ায় ২৮৫ কোটি মার্কিন ডলার। নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক পদ থেকে ইস্তফা দেন কিরিল। নিজের অর্থায়ন দেখার জন্য প্রতিষ্ঠান খোলেন তিনি। বর্তমানে কিরিল শামালভ মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির বর্ধিত করার কাজ দেখাশোনা করছেন। এই কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭০ কোটি মার্কিন ডলার।
এত কম বয়সে এত দ্রুত কীভাবে উত্থান হলো কিরিলের, বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে রয়টার্স। জানা গেছে, পুতিনের মেয়েকে বিয়ের কয়েক মাস পরেই সিবুরের শেয়ার কেনা বিষয়ে পুতিনের বিত্তশালী বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন শামালভ। এর এক বছর পরই নিজের অর্থায়নবিষয়ক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ পান শামালভ। ঋণটি এমন এক ব্যাংক থেকে পাস হয়েছে, যেখানে পুতিন বেশ প্রভাবশালী এবং সেখানকার একটি বড় অবস্থানে আছেন শামালভেরই ভাই। জানা যায়, ঋণের টাকা দিয়ে সিবুরে বিনিয়োগ করেন শামালভ। কয়েক মাসের মধ্যে অভাবনীয় লাভ পান কিরিল। ব্যবসায়িক চুক্তি ও বিয়ে প্রসঙ্গে কিরিল শামালভ ও সিবুর কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
মেয়ের জামাই কিরিল শামালভের নাটকীয় উত্থান আরেকবার রাশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পুতিনের ক্ষমতার বিষয়ে আলোকপাত করেছে। বিয়ে ও শামালভের উত্থান সবকিছুই ঘটেছে লোকচক্ষুর অন্তরালে, তাঁর সমালোচনার কোনো সুযোগ নেই।
রাশিয়ার সাবেক জ্বালানিমন্ত্রী ও বর্তমানে বিরোধীদলীয় নেতা ভ্লাদিমির মিলভ বলেন, পুতিনের বন্ধুরা তাঁর প্রভাব ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অনেক সম্পত্তি করায়ত্ত করেছেন, যার একটি উদাহরণ গ্যাজপ্রম ব্যাংক। ব্যাংকঋণের বিষয়গুলো এতটাই অস্বচ্ছ যে, তা কোনো আদালতে নেওয়া সম্ভব নয়। মিলভের মতে, গ্যাজপ্রম ব্যাংককে পকেট ব্যাংকে পরিণত করা হয়েছে।