অন্তর্বর্তী সরকারের কোলে একদল, কাঁধে আরেক দল : মির্জা আব্বাস

অন্তর্বর্তী সরকার এক দলকে কোলে আরেক দলকে কাঁধে রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
আজ শুক্রবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপি আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত মৌন মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিকেল ৫টায় মৌন মিছিলটি শুরু হয়।
সরকারকে উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করবেন না। আমরা আপনাদের সহযোগিতা করছি। দ্রুত নির্বাচন দিন, দেশের শান্তি ফিরবে। না দিলে আমরা ভাববো, দীর্ঘদিন ধরে দেশকে অশান্ত করার প্রক্রিয়া আপনারাই করছেন।
দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের শহীদদের বিক্রি করে কেউ কেউ রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে।’
শহীদদের নিয়ে আফসোস হয় জানিয়ে এ বিএনপিনেতা বলেন, শহীদদের নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে, রাজনৈতিক ব্যবসা চলছে। তারা বেঁচে থাকলে লজ্জা পেতেন। তারা যে কারণে জীবন দিয়েছিলেন, যে কারণে গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন, তাদের সেই প্রত্যাশাগুলো পূরণ হচ্ছে না।’
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে ওই ঘটনাগুলোকে নিয়ে বিশেষ কয়েকটি দল রাজনীতি করছে এবং শহীদদের বিক্রি করে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার চেষ্টা করছে। কিছু হলেই বলেন আন্দোলনের শহীদ, আন্দোলনের শহীদ, আরে ভাই জুলাই আন্দোলনের শহীদদের সম্মান দেখান। তারা তো কোনো একক ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলকে সমর্থন দেয়নি। তারা সারা দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য জীবন দিয়েছেন।’
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আমরা সংগ্রাম করেছি, যুদ্ধ করেছি, জেলে গিয়েছি কিন্তু সেগুলোর প্রতিদান নেই, চাইও না। কিন্তু জুলাইকে ভিত্তি করে একটি দল প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। আর কিছু দল আছে যারা বেচা-কেনা করছে।’
জামায়াত ও ইসলামি আন্দোলনের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, “একজন তথাকথিত পীর সাহেব বলেছেন, ‘জামায়াতের ছোঁয়া যেখানে লাগবে সেই জায়গায় পচে যাবে।’ মনে আছে কি বলছিল আপনাদের কথাটা? তিনি আজকে জামায়াতের কোলে উঠে বসেছেন। আবার যেই জামায়াত এক সময় বিএনপির কাঁধে চড়ে মন্ত্রী হয়েছে, একসময় আওয়ামী লীগের কাঁধে চড়ে মন্ত্রী হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে তারা দালালি করেছে, তাদের তারা বিক্রি করছে।’
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, 'বিএনপিকে অনেকে আওয়ামী লীগের কাতারে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এমন বাজে কথা বলবেন না যা মানুষের রক্তে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে। বিএনপি ঝগড়ার দল নয়, বিএনপি গণতন্ত্রকামী দল, জনগণের সঙ্গে নিয়ে লড়াই করে। দেশের মানুষের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য বিএনপি ১৭ বছর রাজপথে আন্দোলন করেছে। বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে কেউ কেউ। কিন্তু বিএনপির এক নেতা-কর্মী জীবিত থাকলে, তারা কখনোই সফল হবে না। আমাদের নেতাকর্মীরা জেল খাটতে অভ্যস্ত, রাস্তায় আন্দোলন করতে অভ্যস্ত। জীবন ও যৌবনের অর্ধেক সময় রাজপথ ও জেলখানায় কাটিয়েছি।’
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির হাবিবুর রশিদ হাবিব, ইশরাক হোসেন, আরিফা রুমা, নাদিয়া পাঠান পাপন, মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।