ফরিদপুরের নগরকান্দায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী বৈশাখী ইসলাম বর্ষার (১৮) ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার (৩০ মে) বিকেল ৫টার দিকে নগরকান্দা উপজেলার ভবুকদিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত ২৯ মে বর্ষার ছোট বোনকে স্থানীয় কয়েকজন বখাটে উত্ত্যক্ত করে। বর্ষা এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন ও থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে নগরকান্দা উপজেলার ভবুকদিয়া এলাকায় প্রায় ১০০-২০০ জনের একটি দল বর্ষার বাড়িতে হামলা চালায়, ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে ও বর্ষাকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে। হামলার সময় স্থানীয় বিএনপি নেতা তারা মোল্ল্যা উপস্থিত থাকলেও হামলাকারীদের থামানোর চেষ্টা করেননি বলে অভিযোগ বর্ষার।

হামলার পর বর্ষা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হয়ে বর্বর হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে। এ সময় হামলাকারীদের সমর্থনে স্থানীয় প্রায় ২০০-৩০০ জন পাল্টা অবস্থান নেয়। ফলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে নগরকান্দা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু উত্তেজনা আরও বেড়ে গেলে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে অন্তত একজন পুলিশ সদস্য এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।

বৈশাখী ইসলাম বর্ষা বলেন, ‘আমি একজন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী। কিন্তু আমার বোনকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় আমাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে। হামলাকারীরা বিএনপির লোক। তারা মোল্ল্যা আমাকে আশ্বাস দিলেও হামলাকারীদের থামায়নি।’

নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফর আলী বলেন, পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ ছিল। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সংঘর্ষ এড়াতে শেষ পর্যন্ত ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। আমরা অভিযুক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মেয়ে দুটো ও পরিবারের নিরাপত্তার স্বার্থে সার্বক্ষণিক পুলিশ নিয়োজিত আছে।