বান্দরবানে পাহাড় ধসে রুমা সড়কে যান চলাচল বন্ধ

নিম্নচাপের প্রভাবে বান্দরবানে টানা বর্ষণে বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসে পড়েছে। আজ শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকে বান্দরবান-রুমা উপজেলা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে স্থানীয়দের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে।
প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টরা জানায়, গত বুধবার (২৮ মে) থেকে জেলার সাতটি উপজেলায় থেমে থেমে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার সাতটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে ২২০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। টানা ভারী বৃষ্টিতে রুমা, থানচি, লামা-সুয়ালক, রোয়াংছড়ি-রুমা, থানচি-আলীকদমসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে ছোটখাটো পাহাড় ধসে সড়কে কাদা মাটি জমে সড়কগুলো পিচ্ছিল ও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলা সদরের আর্মিপাড়া, শেরেবাংলা নগর, ইসলামপুর, ওয়াবদা এলাকাসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সড়কে হাঁটু পানি জমে গেছে।
আর্মিপাড়ার বাসিন্দা ইমরান উদ্দিন ও ক্যাচিংঘাটার ওয়েন্টিং মারমা বলেন, পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় দুদিনের বৃষ্টিতেই শহরের নিম্নাঞ্চলের সড়কগুলো জলাবদ্ধতায় ডুবে গেছে। অসংখ্য ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ক্যাচিংঘাটায় বৃষ্টিতে ধসে গেছে সড়কসহ প্রতিরক্ষা দেওয়াল। এতে পৌরবাসীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
পরিবহণ শ্রমিকনেতা মো. জাফর উল্লাহ বলেন, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে অভ্যন্তরীণ সবগুলো সড়কেই ছোট-বড় পাহাড় ধসে পড়েছে। রুমা সড়কের মুরুং বাজার এলাকায় পাহাড় ধসে পড়ায় রুমা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃষ্টিতে সড়কে পাহাড়ের মাটি ধসে সড়কগুলো পিচ্ছিল ও বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি জানান, বৃহস্পতিবার থেকে জেলার সাতটি উপজেলায় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোসহ বিভিন্ন জায়গায় ছোটখাটো পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে। প্রাণহানির আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, ফায়ার সার্ভিস ও রেডক্রিসেন্টের লোকজন মাইকিং করে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র এবং কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।