জব্বারের বলী খেলায় ফের চ্যাম্পিয়ন ‘বাঘা’ শরিফ
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলার ১১৬তম আসরে দ্বিতীয় বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার ‘বাঘা’ শরিফ। আর দ্বিতীয় বারের মতো রানার্সআপ হয়েছেন একই জেলার এম ডি রাশেদ।
আজ শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বলী খেলা ঘিরে চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি চত্বরে নেমেছে মানুষের ঢল। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হয় তিন দিনের বৈশাখী মেলা। এ মেলা হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের প্রধান উৎসব। দেশের বৃহত্তম এ লোকজ উৎসবকে ঘিরে চলছে নানা আয়োজন।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যুবসমাজকে সুসংগঠিত করতে ১১৫ বছর আগে স্থানীয় ব্যাবসায়ী আবদুল জব্বার এ প্রতিযোগিতার প্রচলন করেন। ১৯০৯ সালে সুচনা হওয়া আবদুল জব্বারের বলীখেলা ঘিরে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা। এবার এ খেলা ও মেলা পদার্পণ করেছে ১১৬ বছরে।
বলী খেলা ঘিরে এবারও লালদীঘি মাঠে বাঁশ দিয়ে ঘিরে তৈরি করা হয় কুস্তি প্রতিযোগিতার অস্থায়ী মঞ্চ। একে একে সবার অংশগ্রহণ দর্শকদের বাড়তি আনন্দ দেয়। শক্তি প্রদর্শনে ছোট থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ দেড় শতাধিক বলী অংশ নেন। কৃত্রিমভাবে তৈরি করা এ ট্যাফে একে একে শক্তি প্রদর্শন করে সেরা তিলক তুলে নেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরিফ। আর রানার্সআপ এম ডি রাশেদ।

চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরিফ জানান, এ খেলার জন্য তিনি অপেক্ষায় থাকেন। চট্টগ্রামের মানুষের আতিথেয়তা তাকে মুগ্ধ করে। তবে চ্যাম্পিয়ন হতে তাঁকে ২০ মিনিটের বেশি পরিশ্রম করতে হয়েছে।
রানার্সআপ এম ডি রাশেদ জানান, তাঁকে পরাজিত করতে পারেনি। কমিটির লোকজন ও রেফারি তাঁকে অন্যায়ভাবে হারিয়ে দিয়েছেন। গত বছর শরীফ তাঁর সঙ্গে পেরে উঠতে না পেরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। এবার রেফারি তাঁর সহায় হয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন খেলা পরিচালনাকারীরা।
জীবনের শেষ বয়সে এসে বলী খেলার মায়া ছাড়তে যেমন পারছেন না পুরোনো বলীরা, তেমনি আগামী প্রজন্মকে এ খেলায় আগ্রহী করে তুলতে নানা উদ্যোগের কথাও জানান তাঁরা।
সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আবদুল জব্বারের বলী খেলা ঐতিহ্যের একটি অংশ। বিশ্বের মধ্যে আর কোথাও এ রকম খেলার ১১৬ বছরের কোনো নজির নেই। এ খেলাকে বিশ্ব ঐতিহ্যে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
খেলা শেষে বিজয়ীদের হাতে নগদ অর্থ ও পুরস্কার তুলে দেন সিটি মেয়র। এর আগে বেলুন উড়িয়ে খেলার উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ।