দুবাইয়ে অর্থ পাচারকারী ৭০ বাংলাদেশির তথ্য চেয়ে দুদকের চিঠি

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অর্থ পাচার করে বিপুল পরিমাণের সম্পদ অর্জনকারী ৭০ জন প্রবাসী বাংলাদেশির আয়কর নথিসহ অন্যান্য তথ্য চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির উপপরিচালক রামপ্রসাদ মণ্ডলের সই করা চিঠিটি গত ১৬ এপ্রিল এনবিআরে পাঠানো হয়।
যদিও দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিষয়ে গণমাধ্যমে কিছু জানায়নি। তবে চিঠির বিষয়টি বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকে জানাজানি হয়।
এনবিআরে পাঠানো দুদকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪৫৯ জন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সুইস ব্যাংকসহ বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে পাচার করে পরে তা দিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা সুবিধায় ৯৭২টি প্রপার্টি কেনার অভিযোগ রয়েছে। এসব সম্পদের আনুমানিক মূল্য ৩১৫ মিলিয়ন ডলার।
দুদকের চিঠিতে এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ই-টিআইএন, আয়কর রিটার্নসহ প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহের অনুরোধ করা হয়েছে। তবে চিঠিতে তাদের নামের বাইরে পদ বা বিস্তারিত পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।
এ বিষয়ে দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন জানান, ‘চিঠির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অনুসন্ধান কর্মকর্তা বলতে পারবেন। দুদকের অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় অনুসন্ধান কর্মকর্তা তার প্রয়োজনে যেকোনো নথি তলব করতে পারেন। এটি সম্পূর্ণ তার এখতিয়ারের অন্তর্ভুক্ত।’
উল্লিখিত ৭০ জন বাংলাদেশি হলেন: আহসানুল করীম, আনজুমান আরা শহীদ, হেফজুল বারী মোহাম্মদ ইকবাল, হুমায়রা সেলিম, জুরান চন্দ্র ভৌমিক, মো. রাব্বী খান, মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, মোহাম্মদ অলিউর রহমান, এস এ খান ইখতেখারুজ্জামান, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, সৈয়দ ফাহিম আহমেদ, সৈয়দ হাসনাইন, সৈয়দ মাহমুদুল হক, সৈয়দ রুহুল হক, গোলাম মোহাম্মদ ভুঁইয়া, হাজী মোস্তফা ভুঁইয়া, মনোজ কান্তি পাল, মো. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, মো. মাহবুবুল হক সরকার, মো. সেলিম রেজা, মোহাম্মদ ইলিয়াস বজলুর রহমান, এস ইউ আহমেদ, শেহতাজ মুন্সী খান, এ কে এম ফজলুর রহমান, আবু ইউসুফ মো. আবদুল্লাহ, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, গুলজার আলম চৌধুরী, হাসান আশিক তাইমুর ইসলাম, হাসান রেজা মহিদুল ইসলাম, খালেদ মাহমুদ, এম সাজ্জাদ আলম, মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী, মোস্তফা আমির ফয়সাল, রিফাত আলী ভূঁইয়া, সালিমুল হক ঈসা/হাকিম মোহাম্মদ ঈসা, সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান/সৈয়দ কামরুজ্জামান, সৈয়দ সালমান মাসুদ, সৈয়দ সাইমুল হক, আবদুল হাই সরকার, আহমেদ সামীর পাশা, ফাহমিদা শবনম চৈতি, মো. আবুল কালাম, ফাতেমা বেগম কামাল, মোহাম্মদ আল রুমান খান, মায়নুল হক সিদ্দিকী, মুনিয়া আওয়ান, সাদিক হোসেন মো. শাকিল, আবদুল্লাহ মামুন মারুফ, মোহাম্মদ আরমান হোসেন, মোহাম্মদ শওকত হোসেন সিদ্দিকী, মোস্তফা জামাল নাসের, আহমেদ ইমরান চৌধুরী, বিল্লাল হোসেন, এম এ হাশেম, মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন চৌধুরী, নাতাশা নূর মুমু, সৈয়দ মিজান মোহাম্মদ আবু হানিফ সিদ্দিকী, সায়েদা দুররাক সিনদা জারা, আহমেদ ইফজাল চৌধুরী, ফারহানা মোনেম, ফারজানা আনজুম খান, কে এইচ মশিউর রহমান, এম এ সালাম, মো. আলী হোসেন, মোহাম্মদ ইমদাদুল হক ভরসা, মোহাম্মদ ইমরান, মোহাম্মদ রোহেন কবীর, মনজিলা মোর্শেদ, মোহাম্মদ সানাউল্যাহ চৌধুরী, মোহাম্মদ সরফুল ইসলাম, সৈয়দ রফিকুল আলম ও আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ’ এবং ইউরোপীয় সংগঠন ‘ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি’র তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সাল পর্যন্ত এই ৪৫৯ জন বাংলাদেশির নামে দুবাইয়ে কেনা ৯৭২টি সম্পত্তির কাগজে-কলমে মূল্য ছিল ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার।