এক বছর আগে রাস্তায় খোয়া ফেলে কাজ বন্ধ, দুর্ভোগে অর্ধলাখ মানুষ

কয়েক বছর আগে বেহাল অবস্থা ছিল কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বন্দের মোড় থেকে পশ্চিম দিকে আনন্দ বাজার ভায়া তেলির মোড় রাস্তার ২ হাজার মিটার। দীর্ঘদিনের ভোগান্তির পর সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় এই সড়কের চলাচলকারীরা একটু স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বস্তি বেশিদিন টেকেনি, স্বস্তির সংস্কার কাজ এখন অভিশাপে পরিণত হয়েছে। ঠিকাদারের গাফিলতি আর কর্তৃপক্ষের অবহেলায় দীর্ঘ ১ বছর থেকে বন্ধ রয়েছে উন্নয়ন কাজ। এতে দুর্ভোগের শেষ নেই সাধারণ মানুষের। ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কাজাইকাটা, চর কাজাইকাটা, শান্তির চর, খরানিয়ারচর, ফুলকার চর, সোনাপুর, গেন্দার আলগসহ ২৫ গ্রামে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তাটি উন্নয়ন করার জন্য পুরাতন হেরিং বোন তুলে নতুন করে কার্পেটিং করার জন্য কাজ শুরু করে মেসার্স ফোর কিং ব্রাদার্স ঠিকাদার মন্ডলপাড়া রৌমারী। পরে রাস্তায় খোয়া ফেলে দীর্ঘ ১ বছর থেকে কাজ বন্ধ থাকে। কাজ বন্ধ থাকায় বাতাসে খোয়ার রাভিশ উড়ছে, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। বালি আর ধুলোমাখা পথ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলছে মালবাহী পরিবহণসহ যাত্রীবহনকারী ছোট বড় গণপরিবহণ। সড়কের পাশের সব গাছপালা ইতোমধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে। ঘর-বাড়িগুলো ধুলায় ঢাকা পড়েছে। সড়কের ধুলার কারণে একদিকে যেমন যান চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগতভাবে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে সড়কের ধারে বসবাস করা স্থানীয়দের। সব চাইতে ক্ষতি হচ্ছে স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের-৩ এর আওতায় রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বন্দের মোড় থেকে পশ্চিম দিকে আনন্দবাজার ভায়া তেলির মোড় রাস্তাটির উন্নয়নে ২ হাজার মিটার কাজের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৮২ লাখ ১৭ হাজার টাকা। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পায় মেসার্স ফোর কিং ব্রাদার্স ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সুজাউল ইসলাম সুজা। এদিকে, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে কাজ শুরু করা হয়। যা শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে। অথচ এখনও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার।
স্থানীয় বাসিন্দা মালেক ও আমিনুলসহ পথচারী ও গাড়ির চালকরা জানান, এই সড়কটি রৌমারীর অন্যতম ব্যস্ত রাস্তা। কিন্তু এখন যে অবস্থা তাতে কয়েকশ গাড়ি চলে। পরিচ্ছন্ন পোশাকে একবার এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলেই সেটি আর ব্যবহার উপযোগী থাকছে না। মাথা ঢেকে আর মুখে মাস্ক পরেও চলাচল করা যায় না। এখনই যে অবস্থা তাতে সামনে বর্ষার সময় এলে এই সড়ক দিয়ে কোনো মতেই আর চলাচল করা যাবে না। গ্রামগুলোর মানুষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে দ্রুত উন্নয়ন কাজ করার দাবি স্থানীয়দের।
মেসার্স ফোর কিং ব্রাদার্স ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সুজাউল ইসলাম সুজার ফোন নম্বরে কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মুনছুরুল ইসলাম বলেন, কাজটি দ্রুত করার জন্য ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।