বৈষম্যবিরোধীরা রক্ষীবাহিনীর মতো আচরণ করছে : ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রক্ষীবাহিনীর মতো আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। গতকাল রোববার (২০ এপ্রিল) পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ভিযোগ করেন।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন অভিভাবকহীন এক প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। তারা সারা দেশে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, এমনকি হত্যাকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে। আমাদের এক ছাত্রদল নেতাকেও তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে এখন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়েছে। অথচ এই ব্যানারের কেউ কোনো দায় নিচ্ছে না। সবাই অপকর্ম করে যাচ্ছে। তারা এখন শেখ মুজিবের রক্ষীবাহিনীর মতো উগ্রবাদী আচরণ করছে। এই সংগঠনটি অবিলম্বে বিলুপ্ত করা উচিত।’
ছাত্রদলনেতা নাছির আরও বলেন, ‘পিতামাতাহীন সন্তান যেমন অসহায় থাকে, ঠিক তেমনিভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন নেতৃত্বহীন ও অগঠিত। তারা সারা দেশে আবারও ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েমের চেষ্টা করছে।’
প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব নির্বাচন করছে উল্লেখ করে নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা চাই, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচন হোক। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ছাত্রদলের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে রাজনীতি করতে চাই।’
নাছির উদ্দীন নাছির আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নির্বাচন চালু করা। এর মধ্যে ৬০টি মাদ্রাসাও রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের প্রতি যে বৈষম্য করেছে, তা দূর করতে আমরা রাজনৈতিকভাবে সচেতন করার কাজ করছি।’
নারী শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে নারীরা অনেক পিছিয়ে ছিল। আমরা চাই, তাদের নেতৃত্বে আনতে। আজকের সম্মেলনে অসংখ্য নারী শিক্ষার্থী লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ভোট দিয়েছে—তাদেরকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই দেশকে বদলাতে হলে নারী ভোটারদের ভূমিকা অপরিহার্য।’
নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘এই কাউন্সিলের একটি উদ্দেশ্য হলো গণতন্ত্রের অনুশীলনকে শক্তিশালী করা। গত ১৫ বছরে দেশে যেসব নির্বাচন হয়েছে, তা ছিল অবৈধ ও প্রহসনের। সেখান থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ভোটের সঠিক চর্চা দরকার।’
কাউন্সিলে দুই হাজার ৪৮ ভোটারের মধ্যে এক হাজার ৩৬২ জন শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের জানান, এটা তাদের প্রথম ভোট প্রদান৷ এর আগে তারা কখনও ভোট প্রদান করেননি। প্রথমবারের মতো ভোট প্রদান করে তারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
ভোট গণনা শেষে সন্ধ্যায় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। এতে সভাপতি পদে চারজন প্রার্থীর মধ্যে রাকিবুল ইসলাম রাকিব ৮৭৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। সাধারণ সম্পাদক পদে ৯ জন প্রার্থীর মধ্য থেকে ইমরুল কায়েস কাব্য ৩৮২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি তৌহিদুল রহমান আওয়াল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ ও মোকসেদুল মোমিন মিথুনসহ অন্যান্যরা।