সূর্যমুখীর হলুদ ফুলে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

সূর্যমুখী চাষ করা খেতে এখন ফুলের সমারোহ। হাজার হাজার সূর্যমুখী ফুল পূর্ণতা নিয়ে বাতাসে দোল খাচ্ছে। সবুজ পাতার আড়ালে মুখ উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সূর্যমুখী। চারদিকে সবুজের মাঝে হলুদের সমারোহ। আর এই হলুদ প্রকৃতিকে করেছে আরও সুন্দর। যেন সূর্যমুখীর হাসিতে হাসছে পুরো মাঠ। বাতাসে দোল খাচ্ছে সূর্যমুখী। দেখে মনে হয়, যেন কৃষকের স্বপ্নই দোল খাচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখা যায়, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায়। সূর্যমুখী একটি উচ্চফলনশীল লাভজনক ফসল। অল্প খরচ আর কম পরিশ্রমে ভালো ফলন হওয়ায় এই অঞ্চলে তেলজাতীয় ফসলটির চাষাবাদ বাড়ছে। এই উপজেলায় এবার সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে লাভের স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয় চাষীরা।
কৃষকরা জানায়, সূর্যমুখী চাষে খরচ খুবই কম। পরিশ্রমও খুব একটা নেই। এক বিঘা জমি চাষে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। প্রতি কেজি বীজ ২০০ থেকে ২১০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। ফলে এক বিঘা জমির বীজ বিক্রি করা যায় ১ লাখ ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা। এতে লাভ হয় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। অন্যদিকে ফুলের খোসা ও গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

ভৈরব পৌর এলাকার কৃষক আবুল বাশার বলেন, তিনি চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো আধাবিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। এতে তার ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। যদি তিনি লাভবান হন, তবে আগামীতে তার ৪ থেকে ৫ বিঘা জমিতে চাষাবাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
ভৈরবের সাদেকপুর ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের কৃষাণী স্বপ্না বেগম বলেন, তিনি গত বছর এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছিলেন। এতে তার খরচ হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। তিনি ২০০ টাকা কেজি দরে একটি সিড কোম্পানির কাছে বীজ বিক্রি করেন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। এতে তার লাভ হয় ৯০ হাজার টাকা। তিনি এবারও একই পরিমাণ জমিতে চাষাবাদ করেছেন। এবারও তিনি লাভবান হবেন বলে আশাবাদী।

ভৈরব উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকলিমা বেগম বলেন, সূর্যমুখী একটি উচ্চফলনশীল তৈলজাতীয় ফসল। যা মানবদেহের জন্য খুবই পুষ্টিকর ও উপকারী। বাজারে এই ফসলটির প্রচুর চাহিদা থাকায় দামও ভালো। এতে করে সূর্যমুখী চাষাবাদে কৃষক খুব লাভবান হয়।
আকলিমা বেগম আরও বলেন, লাভজনক এই ফসলটি চাষাবাদে কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ বীজ, সার প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে।